Showing posts with label Random thoughts..... Show all posts
Showing posts with label Random thoughts..... Show all posts

Friday, 22 March 2024

आज घर चलते है

आज सुबह कुछ अलग सा है,
नींद टूटी हवा की सरसराहट से,
आधा अधूरा अँधेरा छाया हुया है इधर उधर,
अचानक ऐसी बदलती मौसम में मन कहीं दूर भाग चला है

घूमता हुया भवंडर जैसे पानी की लहरें आने लगी है
डरी हुयी पंछियो की आवाज़ों से कहीं यह मौसम रूठ न जाये,
घुटन सी थी जो रात, आज उसमे जान सी छाई है,
ताज़ी हवा की छीटें मुझे ले चली है कहीं और

उड़ता हुया एक पतंग बंधी पड़ी थी पेड़ के सिरहाने,
आज उसे आज़ादी सी मिल गई,
उसके साथ मन किया जाऊ उड़के कहीं दूर,
वह दूर कहीं और नहीं,
मेरे अपने घर,
मेरे अपने घर

Wednesday, 14 December 2016

হারিয়ে গেছি আমি

আজ আর সেই ঘর নেই
যে ঘরে আমি বড় হয়েছিলাম
ছোট ছোট পায়ে হাঁটতে শিখেছিলাম যে রেলিং ধরে
আজ সেই সিঁড়িগুলোও নেই
হারিয়ে গিয়েছে কত কিছুই
ছেলেবেলার যত্নে কুড়োনো খোলামকুচি
হঠাৎ আদর পাওয়া ফাটা ফুটবল
সন্ধ্যেবেলার শাঁখের আওয়াজ
ঘুমোতে যাওয়ার আগে দশটা কুড়ির খবর
রবিবারের টিভির সকাল
বছরে দুবার ছুটি ছুটি
আজ আর সেই ঘর নেই

সে বাড়ির বুক চিরে আকাশ ছোঁয়া ইমারত
বাগানগুলো হারিয়ে গেছে পার্কের দাপটে
যত্ন করে ঘাস গজানো, ছোটদের ঢেঁকি-দোলনা
আমার সেই আমগাছটা আর নেই
স্থলপদ্ম, কামিনীরাও কোথাও চলে গেছে
এখন শুধু সময় সময় জল ছিটানো হয়
কেউ গাছগুলো জড়িয়ে ভালবাসে না

আমার পাড়া হারিয়ে গেছে
চারিদিকে নতুন মানুষের ভিড়
আমার খেলার মাঠ
আমার মন খারাপের পুকুরপাড়
আমার প্রাণখোলা আকাশ
সব আজ ঢেকে গেছে উঁচু ইঁটের স্তুপে
আর এদের মাঝেই কোথাও হারিয়ে গেছে আমার ছেলেবেলা
হারিয়ে গেছি আমি
আমার অর্ধেক মানুষটা

Monday, 5 December 2016

গৃহদাহ

পোড়াতে চেয়েছো তুমি
জানো পুড়লে কেমন লাগে?
অল্প অল্প ধোঁয়া পাক খেয়ে উঠতে থাকে 
দমবন্ধ করা বাষ্প গুলিয়ে দেয় গা 
আলোগুলো ঝাপসা হয়ে যায় মুহূর্তে 
এপাশ ওপাশ থেকে লুকিয়ে থাকা পোকাগুলো বেরিয়ে আসে 
অনেক পুরোনো সোঁদা গন্ধমাখা লেপ তোষকের আগুন ধিকিধিকি 

তাপ বাড়তে থাকে তারপর 
ছাইচাপা আগুনেও শিখা জ্বলে ওঠে
উষ্ণতা দুর্বিষহ হয় বাইরে অন্তরে 
শেষ রসটুকু শুষে নেয় লেলিহান 
জ্বলতে জ্বলতে মনে হয় এক কথা 
এও তবে ভালো, যেন সব শুদ্ধ হয়ে যাওয়ার আশায় 
পোড়াতে চেয়েছো ঘর, আমি জানি আজ পুড়লে কেমন লাগে।




Thursday, 28 July 2016

আকাশের জন্য

কাল থেকে আকাশের জন্য খুব মন কেমন করছে
হৃদয় নিংড়ে নেওয়া বৃষ্টি অনেকদিন ধরে নিঃশেষ করে দিচ্ছে অনুভূতি
অঝোর ধারে বয়ে যাচ্ছে স্মৃতি, সুখ, আনন্দের মুহূর্ত
অথচ আমি তো বৃষ্টিই চেয়েছিলাম।

দারুন গ্রীষ্মে ভেতরটা তখন শুকিয়ে কাঠ
মন ফুঁড়ে উঠে আসছে আর্তি, কান্নার মত আঠালো,
দু গাল বেয়ে নামছে দুঃখের ধারা, কষ্টের ব্যথাকে সঙ্গী করে
বিদ্রোহী চেতনা ঢেকে দিচ্ছে উন্মুক্ত শৈশব।

শুষ্কতা ঢেকেছে অন্তর আমার
অন্তরালে থাকা স্নেহ চাপা রয়ে গেছে
এতদিন আজ বড় কম দিন নয়
প্রলেপ কি দিতে পারে উদ্ধত রাগ !

তবু আজ মন ভারী লাগছে আবার
এতদিন পর বৃষ্টিকে দোষী লাগছে কি ?
না হলেও হতে পারে, উন্মাদ মন -
মেঘ সরিয়ে আবার আকাশকে দেখতে ইচ্ছে করছে।




Wednesday, 29 June 2016

সময়টা বড় সুখের না

সময়টা বড় সুখের না,
কাছের হাতগুলো এক এক করে দূরের দিকে পাড়ি দিচ্ছে।
অল্প পাক ধরা সাদা মাথাগুলো আজ তুলোর গাছে লীন।
অনেকদিনের না দেখা মুখগুলো ঝাপসা হয়ে আসছে ক্রমশ।

বয়স বাড়ছে সবার।
বাড়তে থাকা ধুলোর স্তরে ঢাকছে তরল স্মৃতি।
নিঃশ্বাসে ফুরোচ্ছে আয়ু, জলের মত।
একদিন আমিও বুড়ো হব,
শিরশিরে হাতে বয়স আবরণে ঢেকে দেবে শরীর,
অন্তহীন এই যাত্রার মাঝে কয়েকটা হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সময়-
দেখে বেছে নিতে হবে,
অথবা তাদেরও দিতে হবে যেতে।

অদৃশ্য বালুরাশি কাঁচের বয়ামে বন্দি,
মুক্তি চাইছে তারাও,
অতলান্ত নীলে ডুবলে হয়ত ব্যথা বাজবে কম।
দূরের হাতছানি আজ ভাবাচ্ছে আমায় খুব।
সময়টা আজ সুখের না,
সময়টা বড় সুখের না।

Wednesday, 15 June 2016

আমার কলম

আমার কলম রিক্ত ছিল
সুপ্ত মনের ছায়া,
অন্ধ দেওয়াল বন্ধ দুয়ার
মৌন মুখর মায়া।

আমার কলম দৃপ্ত হল
তরবারির শান,
উজ্জলতার উচ্ছাসে আজ
অভ্রভেদী বান।

আমার কলম ক্ষুব্ধ দেখো,
যুদ্ধ ভরা দেশে,
মুক্তি দেবে সেই কলমই
অন্ধ রাতের শেষে।

আমার কলম বলবে যে আজ,
তীব্র তেজের ধার,
উদ্বেলিত হৃদয় জোয়ার
মানবে না আর হার।

Friday, 4 March 2016

মুখুজ্যে মহিমা: শকট সংশয়

অনেকদিন হলো পেটের মধ্যে কথাটা কিলবিল করছে। না পারছি গিলতে না পারছি বলতে। বলতে না পারার কারণ হলো চরম লজ্জা। আর গিলতে না পারার কারণটা ....... না হে, এভাবে বলা যাবে না। দাঁড়াও বাপু, তাহলে খুলেই বলি।

গাড়ি এসেছে, দু একটি বিক্ষিপ্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বাদ দিলে আমি বেশ ভালই চালাচ্ছি।ভালো মানে এই ধর বাজার করতে যাচ্ছি (অবশ্যই মলে, কারণ প্রকৃত অর্থে যাকে বাজার বলে সেখানে গাড়ি নিয়ে যাবার ধৈর্য বা সাহস কোনটিই আমার নেই), অফিসে যাচ্ছি, পাশের পাড়ায় রিহার্সাল দিতে যাচ্ছি ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু কথায় আছে না, খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, কাল হলো তার হেলে গরু কিনে, আমার হলো তাই।

একদিন শখ হলো পাওয়াই যাব। আসলে জায়গাটার সাথে এমনিতেই একটা পুরনো সম্পর্ক আছে, তার সাথে আবার আমার এক বন্ধু সবে পিতৃত্ব লাভ করেছে এবং তার স্ত্রী ও সদ্যোজাত শিশুপুত্র পাওয়াইয়ের একটি হাসপাতালে আছে। তা চললাম অফিসের পর, সাথে আছে দুই বন্ধু, ঝামেলা কিছু হবে না। গাড়ি চলল গড়গড়িয়ে। অফিস থেকে বেরিয়ে সদর রাস্তা ধরে তারপর যানজট পার করে খাঁড়ির সেতু পেরিয়ে মূল মুম্বাই শহরে তো পৌছে গেলাম। উফ, কি যে আত্ম-গৌরব আর ততোধিক আনন্দ সে আর কি করে বলব। আমার সাথে যে দুই বন্ধু ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন আমার সাথেই গাড়ি শিখেছিলেন। তিনি কিন্তু এখনো এতদূর গাড়ি আনেন নি। তাই তাঁর সামনে আমি তখন বামনরূপী শ্রীবিষ্ণু। পেট থেকে তিন নম্বর পা বের করে বাকি দুই বন্ধুর মাথায় রেখে আকাশ ফুঁড়ে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু পথ তখনও বাকি ছিল।

এক্সপ্রেসওয়ে ধরে আমার গাড়ি পাওয়াই পৌছল। উঁচু নিচু ফ্লাইওভার ধরে আমার সেই প্রিয় পুরনো শহরতলি। পেটের ভেতর কবিতা গুঁতো মারবে মারবে করছে এমন সময় ঘটনাটা ঘটল। সামনে একটা গাড়ি, সাদা রং এর মারুতি সুইফট ডিজায়ার। বেশ ছুটছিল, হঠাত সিগনাল দেখে "গঁত" করে বেঁকে দাঁড়িয়ে গেল। আর আমিও টাল সামলাতে না পেরে ইংরেজি ছবির মত দিয়েছি সেটাকে ঠুকে। ব্যাস, আর যায় কোথায়!

রাস্তায় যানজট, চারিদিক থেকে ভেঁপু বাজছে, লোকজন চেঁচাচ্ছে, আর সামনে থেকে স্বয়ং যমরাজ হেঁটে আসছেন। আমি আর কি বলব, পটল দিয়ে সিঙ্গি মাছের ঝোল খাওয়া বাঙালি, হাত পাগুলো পেটের ভেতর সেঁধিয়ে যাচ্ছে। এমন মুখ্যু, যে জানালার কাঁচটা পর্যন্ত বন্ধ করি নি। যমরাজ এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন। মানে জানালা দিয়ে হাত ঢোকালেন, গাড়ি থেকে চাবি খুলে নিলেন এবং অশ্রাব্য গালি দিয়ে নিজের গাড়িতে চড়ে  বসলেন। আমাদের তো মাথায় হাত। "দৌড় , দৌড়"... তাঁর কাছে গিয়ে দেখি আর এক কান্ড। তাঁর পত্নীদেবী সামান্য আহত হয়েছেন আমার ঠোক্করে, আর যমরাজ আমায় গালি দিয়েই চলেছেন। অনেক কষ্টে তাঁদের বোঝাই যে আমি শিক্ষানবিশ মাত্র, আমার কোনো উদ্দেশ্য ছিলনা তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মারার। দেবী তবু একটু নরম, তাঁর কথাতেই আমরা চললাম নিকটস্থ হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে যাবতীয় কাজকর্ম, দেবীর তাত্ক্ষণিক চিকিত্সা ইত্যাদির খরচ বহন করলাম। যমরাজ কিন্তু বকেই চলেছেন, এমনকি মাঝে মাঝে শাসাচ্ছেন যে তিনি কোনো এক বিখ্যাত দৈনিক এর সম্পাদক এবং চাইলে কালই আমার নামে কেস ঢুকে দেবেন এবং আমাকে মিডিয়া দিয়ে উত্যক্ত করে তুলবেন। আমি তো তাঁর গাড়ির ক্ষতি শুধু করিনি, তাঁর স্ত্রীর আঘাত লেগেছে, আর তাঁকে পাঁচদিন গাড়ি দোকানে রাখতে হবে, তাঁকে গাড়ি ভাড়া করে অফিস যেতে হবে, তাতেও বেজায় খরচ। তখনও বুঝিনি এ আমি কার পাল্লায় পড়েছি, যদিও বোঝা উচিত ছিল

যমরাজের পিতাশ্রী এলেন, বৌমাকে নিয়ে বাড়ি গেলেন। আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছিল, আমি সহজ উত্তর দিলাম মুখ কাঁচুমাচু করে যে নতুন গাড়ি চালাচ্ছি তাই ব্রেকের জায়গায় এক্সেলারেটার চেপে ফেলেছি। তিনি খুবই দয়াপরবশ হয়ে বললেন, "হতেই পারে। যাক গে, বেশি কিছু হয়নি সেটাই রক্ষে।" বৌদিমনিকে যারপরনাই বিনয়ে বললাম আমায় ক্ষমা করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য, তিনিও বললেন, "না না ঠিক আছে"। কিন্তু তারপর যা বললেন, সেটি ভয়ংকর, "আমি তো কিছু বলছি না, কিন্তু আমার স্বামী লোকটি মাথাগরম, যান, ওঁকে  শান্ত করুন"

বলে কি! শান্ত করুন মানে? উনি কি সত্যি যমরাজ নাকি তান্ডব নাচা মহাদেব!

বৌদিমনি যে ভুল বলেননি, সেটা প্রমান হল শ্বশুর আর বৌমা বাড়ি যাওয়ার পরে। যমরাজ আরেকজনকে ডেকে আনলেন, ইনি ছোট যমরাজ। বয়সে ছোট কিন্তু তেজে অনেক বড়। ইনি পাওয়াই অঞ্চলে একজন ছোটখাটো প্রোমোটার এবং এনার সবার সাথে ওঠাবসা, সে পুলিসই হোক বা গুন্ডা। কিন্তু আমরা তো তখনও সেসব জানি না। তিনি এসে দাবি করলেন "দুই পেটি দে"। ও বাবা, সে আবার কি কথা! ভর সন্ধ্যেবেলা খামোখা মাছ কিনে ওনাকে পেটিটাই দিতে যাব কেন? তিনি বুঝলেন আমরা অবোধ বালক বালিকার দল এবং সেখানেই আমাদের... বাকিটুকু উহ্য থাক

আমাদের প্রায় খামচে ধরে টেনে নিয়ে চললেন স্থানীয় থানার দিকে। আমরা বুঝলাম এরা টাকা চাইছে। পাঁচ-দশ হাজারে রফা করব, প্রায় ঠিক করে ফেলেছি আমরা নিজেদের মধ্যে। ভয়ে ভয়ে ওনাদের বলতেই হাসির রোল উঠলো। "তোরা বড় বড় কোম্পানিতে চাকরি করিস, আর পাঁচ-দশ হাজারের কথা বলছিস!" কে ওদের বোঝাবে যে বাইরে থেকে যা মনে হয়, আসল সত্যিটা তার উল্টো! লোকে যখন ভাবে আমি কুয়ালালামপুরে শপিং করছি আমি তখন আসলে কদমতলায় কচু তুলছি।

থানা যে কি বিচিত্র জায়গা, সেদিন বুঝলাম। এ দেশে  টাকার জোর ভয়ানক বস্তু। বড় এবং ছোট যমরাজ পর্যায়ক্রমে পুলিস বাবাজিদের কানে মন্ত্র দিয়ে চললেন, এবং সেটিও স্তরে স্তরে উর্ধপদাবলম্বনে। এবং আশ্চর্যের কথা হলো পুলিস বাবাজিরাও কী সুন্দর টোপটা  গিললেন। আমাকে একখানা লম্বা পাতা ধরানো হল। আমার অসাধারণ মারাঠি বিদ্যেয় তার মানে হল এরকম: "আমি অন্যায় করেছি। এবং তারপর ভীষণ মনোকষ্টে ও বিবেক দংশনে ভুগে আত্মসমর্পণ করতে এসেছি"। বোঝো কান্ড! সে আমি তো কিছুতেই সই করব না, আর তারাও ছাড়বে না। এদিকে সময় বহিয়া যায়, নদীর স্রোতের প্রায়

আমাকে বলা হল বাড়িতে ফোন করতে। আমি বললাম, সে করুন, কিন্তু যেই বাড়ির ঠিকানা শুনলো হাওড়া, দ্বিতীয়বার আর "বাবাকে বলে দেব" গোছের শাসানির উল্লেখ করলো না। বুঝলাম এইভাবে আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা বের করতে পারছে না। আর ঠিক তার পরেই দিল মোক্ষম দাওয়াই। একখানা অন্ধকার ঘরে আমাকে দিল পুরে, আবছা আলোয় বুঝলাম আরেকজনকে বেঁধে রাখা আছে সেখানে, চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে! ভাবুন অবস্থাখানা! আমি যত চেঁচাই, তত দরজার কাছে মুখ এনে দর দস্তুর করতে থাকে। দুই লাখ  থেকে কমতে কমতে দেড়, এক পঁচিশ, এক অবধি তো এলো কিন্তু আর কমে নামতে চায় না। 

বুঝতে পারছেন? এখনো চলছে সেই অত্যাচার। বিকেলবেলায় যে দুর্ঘটনাটি শুরু হয়েছিল, সেটি এই রাত সাড়ে  দশটাতেও শেষ হয়নি। আমি সত্যি সত্যিই আর পারছি না। খিদের চোটে  আমার নাড়িভুঁড়ি হজম হবার জো, পিলের ব্যথায় চোখে অন্ধকার দেখছি, আর এই দুই যমরাজ মুদির দোকানের দর দস্তুর চালিয়েই যাচ্ছে। আমার তখন বন্ধ হয়ে আসা চোখের পেছনে একটা নরম বিছানা আর গরম গরম ভাতের ছবি নাচছে। ধেত্তেরি নিকুচি করেছে তোদের দর দস্তুর! বল, কত টাকা চাই তোদের? তোর্  দাম, তোর্  ভাইয়ের দাম, তোর্  গাড়ির ক্ষতির দাম, তোর্  পাঁচ দিনের হয়রানির দাম.... বল কত লাগবে? খুব বুঝতে পারছি যে, এই যমরাজ আসলে আমার স্বপ্নে দেখা ধর্মরাজ এর আত্মীয় নন, ইনি স্রেফ মৃত্যুদাতা, পরবর্তী ধর্মের বিচারের ধারে কাছে দিয়ে এনার যাতায়াত নেই। যে মানুষ স্ত্রীর হালকা আঘাতে পুরস্কার পাওয়ার মত অভিনয় করতে পারে, এবং ঠিক তার পরেই স্ত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে পুলিসকে সাথে নিয়ে আমার সাথে দর সস্তুর করতে পারে, সে আর যাই হোক, সোজা মানুষ নয়। 

আর এই দিব্যজ্ঞান লাভের পরেই আমার সংসার, জীবন, যন্ত্রণা ইত্যাদি যাবতীয় জাগতিক বিষয় থেকে মোহ শেষ হয়ে গেল (না, মানে সেই নরম বিছানা আর গরম ভাতটা  বাদে)। টাকা দিলে এই রাক্ষসদের থেকে ছাড়া পাওয়া যাবে? তো দে টাকা। পরশু বোনাস পেয়েছি না? "দেখুন দাদা, আমার কাছে এই পঁচাশিই আছে, এর বেশি নেই। নিতে হয় নিন, নাহলে আমি আর পারব না।" যেন নিমরাজি হয়েছে, এমন একটা ভাব করে বলল দাও আগে। বন্ধুদের পাঠালাম এ টি এম থেকে তুলতে, কারণ একজনের কার্ডে তো এত বেরোবে না। চোখের সামনে টাকার ভাগাভাগি হল, দেখলাম এবং জ্ঞানার্জন করলাম। আমাকে মুক্তি দেওয়া হল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ

তারপর? তারপর আর কি? এখনো আপনারা পড়ছেন গপ্পোটা?এতক্ষণে তো মনে মনে আমাকে গালাগালি দিয়ে "বোকা" ইত্যাদি বলেছেন নিশ্চয়ই! সে বলুন, আমার দুক্ষু হবে না। শুধু একটা ব্যাপারে আমি খুশি থাকব যে, টাকার মায়া আমাকে বশ করতে পারল না আমাকে আমার সুখী গৃহকোণে ফিরে আসতে, একটা রাতের জন্যও না। এর অনেক পোস্টমর্টেম হতে পারে, অনেক ব্যাখ্যা, অনেক যুক্তি আসতে পারে, কিন্তু আমার সত্যি কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ আমি এই ঘটনাটাকেও একটা শিক্ষা ছাড়া অন্য কোনো নাম দিতে পারি না। 

পুনশ্চ: তা বলে ভাববেন না যেন যে আমি এখনো গাড়ি চালাতে শিখিনি। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? আচ্ছা ঠিক আছে, নিজে একবার এসে পরখ করে যান। সামনের রোববার সকালবেলা কি করছেন? যাবেন নাকি একটা লং ড্রাইভে?




Tuesday, 19 January 2016

সময়

সম্পর্ক কেমন যেন কাঁচের বাসনের মত
ঠুনকো, অস্থায়ী বড় 
হালকা হাওয়ায় বা আঙুলের আলতো চাপে ভঙ্গুর 
সময়ের সমীকরণে বদলে বদলে যায় 
এদিকের ঘুঁটি ওদিকের হাতের বাধ্য হয়
মাত্সর্য বিষে জ্বলে যায় মনের শরীর 
গর্জে ওঠা হুঙ্কারে ঢাকে অবচেতনের কান্না 
প্রতিবাদে প্রতিরোধে মুহূর্তে চুরমার 
জেগে ওঠা ব্যথা ধীরে শীতলের পথ ধরে 
স্মৃতি ফিরে আসে তারপর 
থেকে থেকে ডাক দিয়ে যায় 
বিদায়ী সময় চায় একটু আবেগ
ভাঙা কাঁচ জোড়া লাগে সময়ের টানে।


Monday, 12 October 2015

পুজোয় বাড়ি

আমার বাড়ি কলকাতা নয়,
শিবপুর আমার বাড়ি,
হাওড়া স্টেশন নাম শুনেছ?
ঠিক পাশেতে তারই।

পাঁচশো বছর বটগাছটার
শহর তারও বেশি,
বিদেশ বিভুঁই  ছুঁয়ে এসেও
মনটা ভীষণ  দেশী।

ওপার থেকে ডাকলে যেমন
এইপারে যায় শোনা,
রাতের আলোয় সেতু দুখান
রেশম দিয়ে বোনা।

গঙ্গা যেমন ওদিক দিয়ে
হাওয়ায় টানে মন,
এপার দিয়েও বইতে থাকে,
দুই তীরে বন্ধন।

উত্তরে সেই মোহনবাগান,
এই পারেতেও তাই,
কালীঘাট আর ভবানীপুরের
যমজ যেন ভাই।

কোথাও কোনো অমিল তো নেই,
আত্মাদুটোও সেই,
শহরভাগের তর্জমা তাই
এসবখানে নেই।

শহর দিয়ে যায় না চেনা
কার যে কোথায় ঘর,
কার যে কোথায় হারিয়ে পাওয়া,
টুকরো বার-অন্দর।

পুজো আসে, মাতিয়ে আসে,
ভরিয়ে দিয়ে বুক,
প্রবাস থেকে দৌড়ে এসে
বাড়িই আমার সুখ।

বাড়ি শুধু বাড়ি তো নয়,
মনের কোনের বাসা,
বাড়ি আমার অনেক বেশি
আবেগ দিয়ে ঠাসা।

পুজোর জোয়ার জাগলে মনে
বাড়ির কথা আসে,
বাড়ির ছায়া ভাসতে থাকে
নিঃশ্বাসে প্রঃশ্বাসে।

বাড়ির কোনো দেশ হয় না,
হয় না কোনো রাজ্য
এসব আমরা বানাই কারণ
মানুষ যে বিভাজ্য।

বাড়ি আমার, বাড়ি তোমার,
পুজোয় বাড়ি যাওয়া,
অনেক কমের বিনিময়ে
অনেকখানি পাওয়া।

পুজোর টানে গা ভাসিয়ে
দিই যখনি পাড়ি,
যেইখানেতে বাংলা শুনি
সেইখানে মোর বাড়ি।



Monday, 20 July 2015

কেনা বেচা

অস্থিরতার চোখ দূরে  খোঁজে ঘর 
বিপন্ন জীবন আজ এলোমেলো দিনে 
বাইরের আঙুলেরা ছুঁয়েছে অন্তর 
পুরনো সুখকে বেচো দুঃখকে কিনে 


Thursday, 4 June 2015

সে রাত শুধু

অন্য হাওয়ায় নাম লিখব বলে
অনেক দূরে এলাম এবার চলে
সময় যখন কাঁচা মাটির মত
ইচ্ছেগুলো পাকিয়ে যেন সুতো
মন-পূরণের স্বপ্নগুলো ধরে
সময় আবার যাচ্ছে এখন সরে
সাধ হয় তাদের নামগুলো দিই সোনা
অনেক দিনের আদর দিয়ে বোনা
বিকেলবেলার নরম রোদের টানে
আশকারারা সময় ডেকে আনে
সেই সময়ে ভিজিয়ে নিয়ে হাত
ডাকিয়ে নিলাম টুকরো চাঁদের রাত'
সে রাত থাকুক দূরের শঙ্খচিলে
সে রাত শুধু তোমায় আমায় মিলে
সে রাত জাগুক ভোরের আবছা নীলে
সে রাত শুধু তোমায় আমায় মিলে 

Friday, 25 July 2014

যুদ্ধশিশু

সন্ধ্যে নামছে দূর থেকে
আকাশটা লাল আজও সেই
হাওয়ায় ধুলোর সাথে ছাই
ঘরে আজ আলোটুকু নেই।
ঘরই বা কোনদিকে গেল
হিসেবের নেই কোনো ঠিক
মনে পড়ে পেটে বড় খিদে
হাঁটু গেড়ে আছে আণবিক।
মা বলে ডেকেছিল কাকে
ঘুমের কঠিন জালে ফেরা
অস্তাচলের রং লাল
আরো লাল করে দিল এরা।
মাঝরাতে চমকের সাথে
মুছে গেল শহরের নাম
মুছে গেল সবটুকু থাকা
মুছে গেল সব অবিরাম।
ছিটকে  পড়েছে দেখো হাত
ঐপাশে কারো পাও আছে
বাড়িগুলো শুধু দাউ দাউ
স্মৃতিগুলো বেওয়ারিশ বাঁচে।
ফিরে আসে থেকে থেকে ব্যথা
চমকে চমকে ওঠা ভয়
বুঝে গেছে শেষ নেই কোনো
এইখানে মৃত্যুও নয়।
মা বাপ নেই জানে আর
নেই কোনো পিছু ফিরে দেখা
লালরঙা সন্ধ্যের মাঝে
মর্জিনা একেবারে একা।
একটু পরেই ওরা ডাকবে
সংখ্যার নামে ওর নাম
এক্কা দোক্কা খেলা শুরু
এক্কা দোক্কা বিশ্রাম।
হাসিনাও কাল চলে গেছে
ক্যাম্পের আলোটাও ক্ষীন
হাজার শেকেল দাম ওর
হাজার রাতের বেদুইন।
ছুঁয়ে দেখে নিজের কপাল
মর্জিনা পিছু ফিরে চায়
দুরে, বহুদূরে ঐ কিছু
সন্ধ্যের লাল দেখা যায়।
এসময় ওর  ঘরে ফেরা
খেলা শেষ হয়ত বা হয়
আজ সেই চোখজুড়ে শুধু
যুদ্ধশিশুর বিস্ময়।


Friday, 7 February 2014

ডুবুক

তোমার সঙ্গে খেলব বলে
অনেক দিনের তর
তোমার সঙ্গে বাঁধা বেড়া
অনেক দিনের পুরনো এক নদীর গহীন চর।
ঢেউ ডুবেছে অনেক আগে
এখন ডুবছে মন
এখন ডুবছে এক পৃথিবী
এখন ডুবছে অনেক কালের রাজার গুপ্তধন।
জল দেখেছ ?
জলও ডোবে ডোবার ভালোলাগায়
আমার যেদিন মন ডুবেছে
সেদিন আমার ঠোঁট হেসেছে
সেদিন আমার প্রাণ নেচেছে তোমায় কাছে পাওয়ায়।
"ডুবুক" বলে চেঁচিয়ে উঠেই
হাত মেলেছে পাখা
উড়ে কোথাও হারিয়ে গেছে
চিঠি লুকিয়ে রাখা।
হারিয়ে যাওয়া মন ভাঙনের স্বপ্নগুলো বাদ -
আজকে তবু হারিয়ে পাওয়া "ডুবুক" জলের স্বাদ।

"ডুবুক", ওরা ডুবেই যাক- অতল জলের খোঁজ,
তোমায় আমায় হোক এক দেখা তোমায় আমায় রোজ।

Friday, 29 November 2013

"ব্যোমকেশ ব্যোমকেশ" খেলা

লিখব কি লিখব না সেটাই ভাবছিলাম, শেষ পর্যন্ত ভাবলাম দেশটা তো স্বাধীন আর আমিও। তাই লেখাই যায়, যদিও অনেকে এতে রাগ করবেন, গাল দেবেন কিম্বা হীন-মস্তিস্কের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দেবেন। কোনদিন এর আগে ছায়াছবি নিয়ে লিখিওনি, অনেকবার ভেবেছি, কিন্তু হয়ে ওঠেনি। অথচ আজ প্রবনতাটা এতই প্রবল হল যে বসেই পড়লাম। আর বসে যখন পড়েছি তখন পেটের মধ্যে যেটা গজগজ করছে সেটা উগরে দিই। 

সম্প্রতি একটি বাংলা ছবি দেখলাম। বরেন্য, সংবেদনশীল পরিচালক স্বর্গীয় শ্রী ঋতুপর্ণ ঘোষ মহাশয়ের শেষ ছবি। নাম- সত্যান্বেষী। এবং ঠিক এখান থেকেই আপত্তির শুরু। ওই নামে এই কাহিনীর মুখ্য চরিত্র এবং বাঙালির অতি প্রিয় ব্যোমকেশের একটি জলজ্যান্ত গল্প থাকা সত্ত্বেও পরিচালক নিজের ইচ্ছামত অন্য একটি অতি জনপ্রিয় গল্পের নাম বদলেছেন এবং দর্শক প্রথম থেকেই বিভ্রান্ত হতে শুরু করেছেন। যে গল্পটি নিয়ে এই ছবি, তার নাম- "চোরাবালি"। জানি না পরিচালক মহাশয় কি ভেবে এই পরিবর্তনটি করলেন, কারণ শুধু নামেই তিনি থেমে থাকলেন না। কাহিনীর চরিত্রেরা- মুখ্য গৌন নির্বিশেষে কিরকম যেন পাল্টে গেল। পরিচালক মহাশয় বরাবরই গল্পের নায়িকাদের বিশেষ সম্মান দিয়ে থাকেন, এখানেও তার ব্যতিক্রম নেই। মূল গল্পে তাই যে দুটি মহিলা চরিত্রের শুধুমাত্র নামোল্লেখ আছে, ছবিতে তারাই মুখ্য জায়গা দখল করল। এবং তারপরে শুরু হল আসল খেলা, প্রেম-শরীর-বিছানা থেকে যেন বেরোতে পারলেন না পরিচালক। তাই গল্পটি আর শরদিন্দুবাবুর রইল না, একান্তই ঋতুবাবুর হয়ে উঠল। এতটাই রং বদলাল সে, যে অপরাধের কারণও পরিবর্তিত হয়ে গেল মূল গল্প থেকে, ঋতুবাবু নতুন ব্যোমকেশ লিখলেন। আর বলার অপেক্ষা রাখে না, সেটি গ্রহনযোগ্য নয়, বিশেষত এটি যখন একটি গোয়েন্দা-কাহিনী এবং পূর্বে বহু-পঠিত।  এতই নতুন গল্প উপহার দেওয়ার বাসনা থাকলে বোধ করি উনি অন্য নামের একটি গোয়েন্দা বানালে ভালো করতেন, বাঙালির আবেগে সুড়সুড়িটার প্রয়োজন ছিল না।

ছবিটির কোনদিকই দেখলাম না, যেখানে তাকে একটু প্রশংসা করা যায়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, চেষ্টা করেছিলাম, খুঁজেছিলাম। আমিও আপনাদের মতই পরিচালক মহাশয়ের একজন গুনগ্রাহী, আর তাই কেন জানি না সন্দেহ করতে শুরু করেছি। আদৌ ছবিটি শেষ করেছিলেন তিনি? শুধুই কি post-production, নাকি অনেক কিছুই তিনি নিজে করেন নি? কারণ ছবিটিতে ঋতুপর্ণসুলভ কিছুই নেই। পোশাক এবং অন্দরসজ্জা ছাড়া আমি আর কোনো বিষয় দেখতে পেলাম না যেখানে এটিকে কষ্ট করেও ঋতুপর্ণের ভাবনা বলে মনে করতে পারি। ছবি শুরু থেকেই শ্লথ, ভীষণভাবে জরাক্লিষ্ট। সংলাপও তথৈবচ। "বৈতংসিক ব্রাহ্মন" জাতীয় দু-একটি সংলাপ বাদ দিলে ছবিটিতে গবেষণাও কিছু নেই। নেই শরদিন্দু কল্পিত অসামান্য প্রকৃতি-বর্ণনা। যে শুষ্ক-নদীখাত আর জঙ্গলের আলো-ছায়া কাহিনীর অন্যতম suspense, সেটিও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ছবি থেকে নির্বাসিত।

আর কি বিরক্তি-উত্পাদক অসহ্য অভিনয়! সুজয় ঘোষ সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল যে তিনি খুব বুদ্ধিমান এবং বড় মাপের পরিচালক, কিন্তু এটা কখনই ভাবিনি যে তিনি অভিনয়ের অ-ও বোঝেন না। তাঁর কাজকে তাই under-acting বললেও ভুল হবে। অনিন্দ্য চন্দ্রবিন্দু-সুলভ হাসি থেকে বেরোতে পারলেন না। কালিগতি, বৃদ্ধ-রাজা, হরিনাথ, পুরোহিত ইত্যাদি চরিত্রে অভিনেতাদের অভিনয় ফুত্কারে উড়ে যাওয়ার মত। সেই তুলনায় দেওয়ান চরিত্রটি বিশ্বাসযোগ্য। আর এখানেই দ্বিতীয় সন্দেহ। পরিচালক আদৌ পরিচালনা করেছেন? তাহলে অভিনয়টা করল কে? ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত এবং অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় এখানে একটু সাহায্য করেছেন। অন্তত এঁদের জন্য বসে ছিলাম ছবিটার শেষ অবধি। কিন্তু সেটাই ভুল ছিল, শেষে যা সত্য অন্বেষণ করলেন 'সুজয় বক্সী', তা মূল গল্পের তুলনায় এতই পৃথক যে পরিচালকের সব চেষ্টা জলে গেল।

নড়বড়ে সম্পাদনা বলতে যা বোঝায়, এই ছবিটি তার text book example, তবে ক্যামেরা ভাল। ছবির আবহ নিয়ে বলার কিছু নেই, অসম্ভব খাপছাড়া এবং শ্রুতিকটু বললে কম বলা হয়। তার উপরে ব্যবহারেও খামতি আছে, অপ্রয়োজনীয় দৃশ্যে আবহ আছে, প্রয়োজনে নেই। সর্বোপরি ছবির special effects, এতই দুর্বল যে বিস্ময়ের স্থানে তা শুধুমাত্র হাসির উদ্রেক করে। সাম্প্রতিক হিন্দি ছবিগুলির থেকে কি কিছুই শেখা যায় না এই ক্ষেত্রে? একটি জায়গাতেই মুন্সিয়ানা, তা হল ছবির প্রচারে এবং promo নির্মানে। আর সেখানেই বিভ্রান্তির শুরু, ভালোলাগার শেষ।

সবশেষে এক কথায় এটাই বলার যে পরিচালক মহাশয় এই ছবিটি নিয়ে "ব্যোমকেশ ব্যোমকেশ" খেলতে গিয়েছিলেন শুধু, ছবি বানাতে চান নি, অন্তত ছবিটি শেষ হবার পর তাই মনে হয়।অবশ্য আদতে যদি এটি তাঁর ছবি হয়ে থাকে!

Friday, 22 November 2013

আধ-হজমের উদগিরণ বা বাঙালির কাব্য-চর্চা

কবিতা লেখা বেশ একটা বড় রকমের বদভ্যাস। আমি বিশ্বাস করি (এবং চারিপাশে অনবরত দেখি) যে প্রত্যেক বাঙালি জীবনের কোনো না কোনো একটা সময়কাল জুড়ে কবিতা লেখে বা লেখার চেষ্টা করে। না, আমি এই প্রবণতাকে খারাপ বলছি না। বরং এ এক রকমের অহংকার। এ হলো স্বভাব কবি বাঙালির স্বাভাবিক কবিত্ব প্রকাশের পূর্বনির্ধারিত প্রস্ফুটন অথবা সংস্কৃতিপ্রেমী জাতির প্রতিভার বিচ্ছুরণ। তাই এতে আমার বিরুদ্ধ মতবাদ প্রকাশ করার কোনো জায়গা নেই। তাহলে "বদভ্যাস" কেন বললাম? সেখানে উপযুক্ত কারণ আছে এবং সেই কারণ সকলের জানারও প্রয়োজন আছে। পাঠক ভাবতে পারেন আমিও আঁতলামি করছি। ভাবুন, ক্ষতি নেই, তবু নিজের ভাবনাটা আপনাদের মধ্যে সঞ্চারিত করতে পারছি এই অনুমানেই আমার আনন্দ। 

কবিতা অতি পবিত্র জিনিস। আদিকবি পক্ষীদম্পতির মিথুনকালে হত্যার আয়োজনে অতিশয় কষ্টভোগে প্রথম কাব্য রচনা করেন। তাই প্রথম কবিতা দুঃখের কবিতা। এবং কিমাশ্চর্যম! সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিও জীবনে প্রথম কবিতা লেখে প্রেমে দাগা খেয়ে পড়তে পড়তে সামলে উঠে। কখনো সে আঘাত এতই দুর্বিষহ মনে হয় যে বাঙালি প্রেমিক (অথবা প্রেমিকা) কবিতা লিখেই চলে। পাতার পর পাতা ভরে উঠতে থাকে অনির্বচনীয় কষ্টের দিনলিপিতে। এবং সেখানেই আমার প্রথম যুক্তি। আদৌ কি সেগুলি কবিতা? নাকি তার নাম ধার করে বুকের ভেতরে জমে থাকা, গিলতে বা হজম করতে না পারা প্রেম-অম্বলের ঢেঁকুর? তাহলে তাকে কবিতা নাম দিয়ে কবিতার অপমান করি কেন? হতে পারে, এই পরিস্থিতিতেও কবিতার জন্ম অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তার মধ্যে কাব্যগুণ থাকা আবশ্যক। কে নির্ণয় করবে? কবি নিজে

 দ্বিতীয় যুক্তি অন্তমিলে। একটা সময় ছিল যখন সবাই ছন্দে কবিতা লিখত এবং কবিতার রীতি ছিল তাই। কিন্তু তারপর এলো ছন্দহীন সময়। সুর-তাল কেটে গেল চারিদিকে। আর সাহিত্য যখন সমাজের প্রতিফলন, তখন কবিতা কেন ধরে রাখবে তার ছন্দ? সময় এলো পরিবর্তনের, কবিতা ছুটল নিজের মত করে। কারো ধার সে ধারে না। প্রথমে একটু আলোড়ন হলো, তারপর ছন্দহীন কবিতা সর্বগ্রাসী হয়ে বাকিদের গিলে খেল। রাক্ষসী যেন! আমার কোনো ধারা নিয়েই আপত্তি নেই। দুরকম কবিতাই আমার ভালো লাগে, যদি সেটা আদতে কবিতা হয়। এবং আমার মনে হয়, পাঠকেরও তাই লাগে। তাহলে জোর করে ছন্দ জুড়ে বৃথা প্রয়াস কেন ভাই? ভাবটাকে নিজের মত করে কথায় সাজিয়ে দাও না কেন-- তাহলেই তো একটা রূপ খাড়া হয়ে ওঠে। সেখানেও অসুবিধা আছে, অল্প বয়সে বাঙালি ছন্দ মিলিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করে, আর একটু বড় হয়ে রবীন্দ্রনাথ-কল্লোল-জয় গোস্বামী-শ্রীজাত পার করলেই ছন্দহীন বিজাতীয় বিসদৃশ শব্দমালা সাজাতে থাকে প্রানের আনন্দে।

তার না আছে মাথা, না আছে মুন্ডু। চারটি ভিন্নধর্মী, তিনটি খাপছাড়া, দুটি ইংরাজি আর একটি ফ্রেন্চ বা ইতালিয়ান শব্দ পাশাপাশি বসিয়ে দিলেই ব্যাস -- আর পায় কে! এবারের অমুক পুরষ্কার আমার বাঁধা। আজকাল এই দিকটার চর্চাই বেশি হচ্ছে। যে যত বেশি দুর্বোধ্য শব্দ-সম্মেলন রচনা করবে, সে তত বড় কবি। কাব্য সমালোচকরা তো আরো এক কাঠি সরেস, তারা এমন এমন মানে বের করবেন, যা হয়ত কবি কেন, কবির অন্তরাত্মাও কোনদিন কল্পনা করতে পারেন নি

আর সবচেয়ে মারাত্মক হলো শেষ প্রকার। এই দল ভাবেন যে তাঁরা যা করবেন, তাতেই তাঁরা সেরা। সত্যি, বাঙালির এই রবীন্দ্রনাথ -বিভ্রম যে কবে যাবে! করছ বাপু রাজনীতি, খামোখা কবিতা লিখতে যাও কেন? তবু বারণ শুনবেন না এঁরা, লিখেই যাবেন এবং প্রতিদিন লজ্জা দেবেন। আবার কিছু লোক আছেন, যাঁরা এঁদের প্রতিভার প্রতি চরম আস্থা রেখে প্রতিদিন উত্সাহ দিয়ে যাবেন। বেনাবনে মুক্তা ছড়ানো, জাতীয় ফুটবল দল এ উত্সাহ পেলে উতরে যেত! কিছু করার নেই

অনেকক্ষণ জ্ঞান দিলাম। কিছু মনে করবেন না ভাই, কাজ ছিল না, তাই দিয়ে ফেললাম। এটাও একটা অত্যন্ত ভয়ংকর অভ্যাস বটে, কিন্তু সে প্রসঙ্গে আরেকদিন বসব, আজ নয়। বালাই ষাট, লিখে যান দাদা দিদিরা, আমার কথায় যেন উত্সাহ হারাবেন না, "শ্রাবনের ধারার মত" কাব্য-চর্চা করে যান। নাহলে যে বাঙালি নামটা আর রাখা যাবে না


Friday, 17 May 2013

ভোর


কোথাও দূরে যাচ্ছিলাম
অনেকটা দূর জায়গাটা
দেশ থেকে বিদেশে খানিক
অপেক্ষার পর আবার যেতে হবে।

অপেক্ষার সারি অতি দীর্ঘ,
ধীরে ধীরে কচ্ছপের মত চলে,
গায়ে হাত দেয় বিদেশী পুলিশ
সন্দেহে তাকায় মুখের পানে।

লুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম স্মৃতি,
তাকেও আটকাবে সে?
বহুদূরে থাকে যে মানুষ,
কতটুকু বাকি তার থাকে?

সেটুকুও কেড়ে নিলে ফের
আরো দূরে যেতে হবে আজ
নিজেকে আবিষ্কার করি
প্রেয়সীর শহরের মাঝে।

হারিয়ে গিয়েছে বন্দর,
হারিয়েছে বিদেশী পুলিশ,
পুরোনো ধুলোয় এক বাড়ি
মাথা তুলে আছে মাঠের মাঝে।

নীচে তার সশস্ত্র প্রহরী
বাধা দেয় উপরে যেতে,
আমার সাথের সঙ্গীরা
ফিরতে চায় নিজেদের ঘরে।

বাতিল হয়েছে উড়ান
কাল ফেরা যাবে না শহরে,
এখনই ফিরতে হবে তাই
প্রেয়সীও জানলো না কেন।

ডাক দিই একবার তাকে,
যদি শুনে নেমে আসে সে,
আধোঘুমে হারায় সে ডাক
আমি যাই, যাই শুধু ফিরে।

তবু দূরে যেতে যেতে দেখি,
মই বেয়ে নামে তাড়াতাড়ি
পাগলিনী আলুথালু বেশে
খুঁজছে শুধুই আমায়।

Wednesday, 7 November 2012

Assorted Overflowing Emotions

To be an adult, is to be alone
~ Epictetus

All of our reasoning ends in surrender to feeling.

~Blaise Pascal

Continuous effort - not strength or intelligence - is the key to unlocking our potential.

~Winston Churchill

Loneliness

Missing Question

Play House

Love

Tuesday, 4 September 2012

আমি


















ঘুম ভেঙে দেখি আজ অঝোর আকাশ
পর্দা দুলছে মিঠে বাতাসের শ্বাস 
বহুদূরে কারো ঘরে ভৈরবী সুর 
আঁধারের বুক ছিঁড়ে বৃষ্টি নূপুর।

মুখ ভার তবু তাকে বড় ভাল লাগে 
কালো মেয়ে ঝরে ঝরে তাই রাত জাগে 
সকাল হয়েছে আজ তবু মেয়ে জয়ী 
আলো ফোটা ভোর নয়, শ্যামা মোহময়ী।

ও বাড়ির ছাতে দুটো কাক ভিজে স্নান 
তবু খোঁজে দুজনেই উত্তাপ-প্রাণ 
অলস বারান্দায় এক-দুই-তিন 
দিনলিপি হারিয়েছে আজকের দিন।

নিয়মের বাঁধা ছকে বাধা দিল কেউ 
ভাবনার সাগরে নীড়ভাঙা ঢেউ 
আজ কেউ ডাকবে না, নেই কোনো তাড়া 
আমি ডাকব যাকে, সেই দেবে সাড়া।

এইভাবে একদিন ভোর হোক তবে 
যেদিন আমার টানে বৃষ্টিটা হবে 
আমার জীবন হবে আমার একার 
আমার জীবন হবে আমায় দেখার।

সুখী হোক সেই দিন সুখী হোক ভোর 
আমার জীবনকাঠি জীবনের ডোর 
একা নীল পৃথিবীতে একা আমি এই
নিজের জগতে তাই দোকা কেউ নেই।



Monday, 20 August 2012

Wine, Nokia and a Sunday Afternoon

"I live so that I can eat".... this one liner came to my mind when it was flagged off. I was nowhere up to the mark with the standard the crowd was having. Still I told to mysef it will be good enough if I present the words nicely, with a twist of my acting skills! But the chance never came...


I was there at Taj Land's End for an event called "Nokia AppTasting" organised by Indibloggers. Punit, my friend, philosopher and guide in blogging world called me in the middle of the night to days prior to the event to tell me about it. I was excited since then. This one is going to be my first ever bloggers' meet, that too at Taj! Thought a lot about it for next two days and the time arrived. Almost rushed from an invitation to be on time. As we stay in Navi Mumbai, it is quite an hour drive to reach bandstand. We started at around 4 in the afternoon. We decided not to drink as I will be driving. But you know something...

The kick off was awesome. Though I didn't follow all the crazy acts, but somehow I liked the inner punch behind the "hurrrr" cry, within those hundreds of feasts, among those glaring eyes, within those priceless smiles. It's always a pleasure to watch people smiling... and I took that opportunity. Lucky me..

The hosts for the evening were celebrity maste chef Vikas Khanna and gadget guru Rajiv Makhni. "Witty Rajiv and Shy Vikas".. I must borrow the line from Punit to describe the duo in a simple way. But it was really a fun watching these guys in different roles. We were told to take a side with proper justification, either foodie or techie if we were called on the stage for the intro session. And then I thought of the first line of this blog. But the chance never came...

It went on, intro, random blogger pick up, quiz, wish-an-app, app tasting, instant questions, treasure hunt, culinary exercises and so on and so forth. But I never got a chance to come in front of the audience. Basically a backbencher is always a backbencher. And then only I thought why not to utilise the time in a different way. Why not to wear another pair of glasses through which I can see the people around me. I explored a lot. I met a guy who just quitted his job so that he can travel on his motorbike. I interacted with another guy who is an engineer, has a good job, holding a part time business and earning some money from his blog posts too. I made another friend who was in banking, but considers himself a thinker. I met a lady who helps Punit for his blogs, two guys from IIT, one techie another being a would-be-MBA. Even got a greetings card from 21 Fools and the guy told us not to keep it but spread the "awesomeness" of our beloved one through that card. Had a chance to talk to one of the stalwarts of Indibloggers, and had chances to enjoy sula with mutton curry in a Taj Ballroom. Enormous crowd, shining chandeliers, humorous hosts, equally witty audience, energetic organizing team and last but not the least the venue.. It was an experience of its kind in my life. Thanks to Indibloggers 5th birthday celebration and the app tasting event, I enjoyed my lazy Sunday evening in a mood that I wanted to, within an ambiance which I loved like anything, among those people whom I could connect. And there came my wish.. "Nokia.. can you create an app which will search a friend in its proper sense when I am alone, down and have nowhere to go?"

For more pics of the event, you can check this:

Wednesday, 22 June 2011

ডাক

সাঁঝবাতিটার মন ভারী আজ,
জ্যোত্স্না এলো ঘরে,
দিন ছিল আজ তপ্ত কঠিন
রাত্রে বৃষ্টি ঝরে|
 
ওরনা ঘেরা জানলা বুঝি
হাঁসফাঁসিয়ে ওঠে,
মিষ্টি হাসির দুষ্টু আঙ্গুল
আলতো ছুঁলো ঠোঁটে|
 
ঝলমলিয়ে জল ঝরে যায়,
থামতে বোধ হয় মানা-
ছাদের দেয়াল অল্প আলোয়
দিছে মেলে ডানা|
 
দূরের দেশে ডাক চলে যায়
শীতের শেষে ফেরা-
আঁধার ভোরে গাছের পাতায়
শিশির দিয়ে ঘেরা|
 
                                                        
ডাকছে তোমায় ওই দেখো কেউ
ডাকছে তাড়াতাড়ি,
সাজিয়ে দেখো বসেই আছে
ভালবাসার বাড়ি...