Tuesday 12 February 2019

মুখুজ্যে মহিমা: ভুতুড়ে আড্ডা

মুখুজ্যেদাকে আমরা অনেকদিন থেকে চিনি। সেই এম এস সির সময় থেকে। আমরা হোস্টেলের বস্তাপচা খাবার খেয়ে খেয়ে যখন নাস্তানাবুদ, মুখুজ্যেদা তখন আমাদের বাড়িতে ডেকে ভালমন্দ রান্না করে খাওয়াত। বলত, ওরা যখন হোস্টেলে ছিল, ওরাও নাকি সিনিয়র পাকড়াও অভিযান করে সিনিয়র দাদা দিদিদের বাড়ি গিয়ে শনি রোববার চুটিয়ে মজা করত। 


তা এ হেন মুখুজ্যেদার বাড়ি আমরা গেছিলাম আগের শুক্রবার বিকেলে। হোস্টেল ছেড়েছি বেশ কিছুদিন হল। এখন আমরা সবাই হয় চাকরি, নয় রিসার্চ নিয়ে ব্যস্ত। আগের মত সবার আর একসাথে হয়ে ওঠা হয় না। তাই আগের রোববার যখন মুখুজ্যেদার নেমন্তন্নটা এল, কেউ আর দুবার ভাবেনি। অনেকদিন পর আবার সবাই একসাথে হবার এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে নাকি! 


আমরা ঠিক করেছিলাম সবাই একসাথে যাব, সদ্যবিবাহিত মুখুজ্যেদার জন্য একটা কোনো উপহার নিতে হবে। তা সেসব সামলে যখন দাদার বাড়ির নিচে পৌঁছলাম, সন্ধ্যে গড়িয়ে গেছে। অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গেল গপ্পো করার, কারণ মুখুজ্যেদা একটা গল্পের ভান্ডার বললে কম বলা হয়। যাক গে, বেশি রাত জেগে সেটা পুষিয়ে নেওয়া যাবেখন। 


ঢুকতেই দেখি বৌদি মুড়ি, চপ, মিষ্টি আর চা নিয়ে রেডি। আমরা বললাম এটা কি করে হল? এই সময়েই আসব জানলে কি করে? ক্লাসিক দেঁতো হাসিটা হেসে জবাব দিল মুখুজ্যেদা। “তোরা তো অনেকক্ষণ ধরে নিচে ঘুরঘুর করছিস দেখলাম। একবার চাদরের দোকান, একবার মিষ্টির দোকান, বুঝলাম আমাদের জন্যেই কিনছিস কিছু। তখন তোদের বৌদিকে বললাম, চলো ততক্ষণ জলখাবার রেডি করা যাক।” এই হল মুখুজ্যেদা।


চা খেতে খেতে নাড়ু কথাটা তুলল। নাড়ু আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বকবক করে, আর যেখানে যা ইচ্ছে বকতে পারে। “শোনো মুখুজ্যেদা, অনেকদিন ধরে সেই গপ্পোটা বলবে বলছ, কিন্তু বলছ না। বৌদি তোমায় বলেছে?”

  • “কি?” বৌদির একগাল মাছি
  • “আরে ভুতের গল্প, দাদার নিজের অভিজ্ঞতা”
  • “কই নাতো” বৌদি ঠোঁট বেঁকাচ্ছে। ওর তো যত গপ্পো তোদের সাথে।
  • “আরে না না, আমাদেরও বলে নি।” এবার নাড়ু অপ্রস্তুত।
  • “আচ্ছা বলছি বলছি” এতক্ষণে মুখ খুলেছে মুখুজ্যেদা। “সেটা বছর ছয়েক আগের কথা। আমার এক মাসতুতো দাদার বিয়ে, একটা ছোট রেল শহরের সরকারি কোয়ার্টারে দাদারা থাকত তখন। কোয়ার্টারগুলোর অবস্থা খুব খারাপ, মেন্টেনেন্স নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ লোকজন চলে গেছে বাড়ি করে, কিন্তু কোয়ার্টারগুলোর দরজায় তালা ঝুলিয়ে, কারন সরকার নাকি ওগুলোকে কম পয়সায় মালিকানা হস্তান্তর করবে! সেরকম কয়েকটা কোয়ার্টার মেসোর চেনা লোকের ছিল, মেসো চাবিগুলো চেয়ে রেখেছিল বিয়েতে কাজে লাগবে বলে। তত্ত্ব সাজানো, ন্যাড়াযজ্ঞির খাওয়া এসবের জন্য তাহলে কিছুটা এক্সট্রা জায়গা পাওয়া যাবে। এরকমই একটা ফ্ল্যাটে সেদিন আমরা সারাদিন ধরে তত্ত্ব সাজিয়েছি। দিনটা বিয়ের পরেরদিন। কালরাত্রি, তাই দাদা গেছে বন্ধুর ফ্ল্যাটে শুতে। বৌদি আর তার বাড়ির কয়েকজন মাসিদের সাথে মাসিদের বাড়ি, আর আমরা ভাই বোনেরা ভাগ হয়ে কয়েকটা ওরকম চেয়ে নেওয়া ফ্ল্যাটে। তা যে ফ্ল্যাটে তত্ত্ব সাজানো হচ্ছিল, আমরা সেই ফ্ল্যাটে শুতে গেছি, আমি আর আমার এক ভাই রানা। বেশ রাত হয়ে গেছে, তাই ঘুমও পেয়েছে জব্বর। ঢুকে খেয়াল করলাম, বাইরের ঘরের আলোটা জ্বলছে না। এটা কি হল? সারাদিন তো আমরা আলো জ্বেলেই কাজ করেছি, এখন কি হল? যাক গে, শুতে এসে আলো কি করব? এই ভেবে ঢুকে পড়লাম। বাথরুমে যাব বলে বাইরের ঘর থেকে ভিতরে যাবার দরজাটা খুলতে গিয়ে দেখি দরজাটা কেমন আড়ষ্ট হয়ে আটকে আছে। পুরোপুরি খুলছেও না, আবার পুরোপুরি বন্ধও হচ্ছে না। এতো মহা ঝামেলা। দিনের বেলা তো এসবকিছু হ্যাঙ্গাম ছিল না। কি আর করা যাবে! দরজাটা কোনোমতে ঠেলে বাথরুমে গেলাম। আরে! ওটা কি? সকালে তো ওটাকে দেখিনি! বাথরুমের সিলিঙে একটা চামচিকে ঝুলছে। রানাকে ডেকে জলটল ছুঁড়ে কোনোরকমে ব্যাটাকে জানলা দিয়ে বের করলাম। আলোটা নিভিয়ে বাইরের ঘরের খাটটায় শুতে আসব, দুম করে ফিউজ উড়ে আলোটা কেটে গেল—-“


আর ওমনি ঝপ্ করে লোডশেডিং হয়ে গেল। নবী মুম্বইয়ের এসব দিকে লোডশেডিং হয় না বললেই চলে। তাই গল্পের এরকম একটা জায়গায় অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় সবাই অল্প বিস্তর চমকেছি। গল্পের সাথে সাজুজ্য রেখে লোডশেডিংটা যে নেহাতই কাকতালীয়, বোধহয় সেটা প্রমাণ করতেই গৌরব বলল “আহা থামলে কেন? তারপর কি হল বলবে তো”। মুখুজ্যে বৌদি গুটিসুটি দাদার গা ঘেঁষে বসেছে, সুমন আমাদের মধ্যে একটু বেশি ভিতু, বলল “দাদা, এখন আর ভাল্লাগছে না, তার চেয়ে একটু গানটান হোক”, সঙ্গে সঙ্গে আমি বললাম

  • “বাবুসোনা, তুমি ঐঘরে গিয়ে গান গাও যাও, আমরা এখন গল্পটাই শুনব। তাহলে আর তোমার ভয় লাগবে না।”
  • “বাজে বকিস না। ওসব ভুতটুত কিচ্ছু নেই। যত্তসব গাঁজাখুরি।”
  • “তাহলে ভয় পাচ্ছিস কেন? শোন না”


সুমন ব্যাজার মুখে চুপ করে বসে গেল। মুখুজ্যেদা আবার শুরু করল- “এবার বাথরুমের আলোটা কাটতে আমাদের একটু অস্বস্তি হতে লাগল। যেন কোনোকিছুই যেমন হবার কথা তেমন হচ্ছে না। একটা মন খচখচানির ভাব নিয়ে আমরা মোবাইলের আলোয় বিছানা করে শুয়ে পড়লাম। তারপর গল্প করতে করতে কখন যে তন্দ্রামত এসে গেছে খেয়ালই করি নি। চটকাটা ভাঙল একটা অদ্ভুত শব্দে। আর শব্দটা আসছে ভেতরের ঘরটা থেকে। যেন কেউ হেঁটে বেড়াচ্ছে, অথচ সাধারণ হাঁটা নয়। কারো পায়ে গোলমাল থাকলে যদি সে এক পা ফেলে আর এক পা ঘষে হাঁটে, যেরকম শব্দ হয়, সেরকম। সাথে একটা লাঠির মাটিতে পড়ার শব্দ। স্পষ্ট শুনছি আমি সে আওয়াজ, ঐ তো ঐ ঘরে! শব্দটা ভেতর থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে, দুটো ঘরের মাঝের দরজাটায় এসে থামছে, তারপর আবার ভেতরের দিকে চলে যাচ্ছে। আমি কিছুক্ষণ মন দিয়ে শুনলাম, আগে নিশ্চিত হতে চাইলাম যে আমি যা শুনছি সেটা আমার স্বপ্ন বা কল্পনা নয়, সত্যি। যখন বিশ্বাস হল, আস্তে আস্তে রানাকে ডাকলাম। রানা ঘুমের মধ্যে বলল “ও কিছু না, ঘুমিয়ে পড়।” আমি ওকে জোর করে ধরে বসিয়ে দিলাম। ওর ঘুমটা ছুটে যেতেই ও শুনল শব্দটা, আর শুনেই ভয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি ফিসফিস করে ওকে বললাম “আওয়াজ করিস না, চোর হতে পারে, হয়তো বিয়েবাড়ি দেখে কোনোফাঁকে ঢুকেছে। আমাদের মাথা ঠান্ডা রেখে বাইরে গিয়ে বাকি লোকজনকে ডাকতে হবে।” চোর ব্যাটা যদি বুঝে যায় আমরা জেগে তাহলে আমাদের ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল, ওদের কাছে ছুরি টুরি থাকে। এই ভেবে আমি খুব সন্তর্পনে মশারিটা তুলেছি বেরাবার জন্যে, আর সেই মূহুর্তে সেই চলমান শব্দ এসে দাঁড়িয়েছে মাঝের দরজার কাছে। যেন শ্বাস পড়ছে সেই অদেখা শরীরটা থেকে, স্পষ্ট টের পাচ্ছি ফ্ল্যাটের মধ্যে তৃতীয় একটা উপস্থিতি। আমার বাড়ানো ডান পাটা আটকে আছে মেঝেতে পড়ার আগে, আর সেই অদৃশ্য শরীরের মালিকও দাঁড়িয়ে পড়েছে কোনো এক অজানা কারনে। পা ঘষে সেই আওয়াজটা আর ভেতরদিকে যাচ্ছে না। যেন অপেক্ষা করছে আমার পরবর্তী পদক্ষেপের। অনন্ত এই বিশ্রী পরীক্ষায় আমারই পরাজয় হল। আমি আমার পা মেঝেতে রাখতেই কি যেন একটা মাড়ালাম। সকালের তত্ত্বের থার্মোকল বা কিছু একটা হবে। আর তাতে শব্দ হল একটু। মূহুর্তের মধ্যে যেন একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল আমার শিরদাঁড়া দিয়ে! কারন দরজার উপরে ততক্ষণে কেউ চাপ দিয়ে দরজাটা আস্তে আস্তে খুলছে, রানা চেঁচিয়ে উঠল “কে কে, কে ওখানে?” আর বলার সাথে সাথেই দরজার উপরে এক মোক্ষম বাড়ি পড়ল, আর পুরো ঘরটা ভরে উঠল একটা অপার্থিব হাসিতে। বুড়োমানুষের গলার হাসি, খুনখনে অথচ তীব্র। দরজাটা ফাঁক হয়ে একটা ছায়ামূর্তির আদল, ঘোলাটে কিন্ত চরম সে উপস্থিতি! আমরা কোনোক্রমে মশারি টশারি ছিঁড়ে বেরিয়ে বাইরের দরজা খুলে বেরিয়েই আবার দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছি। আর প্রাণপনে ডাকছি “দাদা, মেসো, তাড়াতাড়ি এসো। চোর চোর।”


আর চোর! সবাই দৌড়ে এল, টর্চ জ্বেলে ভেতরে ঢুকে সুইচ দিতেই আলো জ্বলল। আমরা অবাক। সমানে বলে গেলাম যে আমরা হাজার চেষ্টা করেও আলো জ্বালাতে পারিনি। বাথরুমেও আলো জ্বলল। দুই ঘরের মাঝের দরজাটাও কি এক অজ্ঞাত কারনে এখন স্বাভাবিকভাবে খুলল আর বন্ধ হল। প্রমাণ হয়ে গেল আমরা দুই ভীতুর ডিম বিয়েতে গুরুপাক খেয়ে পেট গরম বাধিয়ে স্বপ্ন দেখেছি।”


ইতিমধ্যে কারেন্ট এসে গেছে। সুমন বোধহয় সবথেকে বেশি খুশি হয়েছে ভুত না হয়ে স্বপ্নের গল্প শুনে। আমরা বলা বাহুল্য হতাশ। আমি বললাম “এই তোমার ভুতের গল্প?” মুখুজ্যেদা দেখি মুখ টিপে টিপে হাসছে।আবার বললাম “বলো না, এখানেই শেষ?”

  • “আমি কি তাই বলেছি?”
  • “ও তাই? তাহলে থামলে কেন? বলো বলো”


চা মুড়ি ততক্ষণে শেষ। একটা সিগারেট ধরিয়ে বেশ আয়েস করে ধোঁয়া ছেড়ে মুখুজ্যেদা বলল “আমরা ভীতু হই আর যাই হই, বলে দিলাম আর ওঘরে শোব না। বাকি রাতটা আমাদের অন্য কোথাও জায়গা দিতে হবে। অগত্যা দাদা যে বন্ধুর বাড়ি শুয়েছিল সেখানেই আমাদের বিছানা হল চেপেচুপে। কিছুক্ষণ পরে যখন ঘুম এসেছে, শুনলাম দাদা আর দাদার বন্ধু বাবলুদা চাপাস্বরে কথা বলছে। আমি মটকা মেরে শুনলাম পুরোটা। যে ফ্ল্যাটে আমাদের শুতে দেওয়া হয়েছিল সেখানে এক বয়স্ক ভদ্রলোক থাকতেন। তাঁর এক পায়ে গোলমাল ছিল তাই লাঠি নিয়ে হাঁটতেন পা ঘষে ঘষে। তিনি একাই থাকতেন, এক ছেলে, বাবাকে দেখত না। একা ফেলে চলে গেছিল বাইরে। বুড়ো তন্ত্রমন্ত্র জানতেন। ফ্ল্যাটের বাইরে থেকে অনেকে অনেক রকম আওয়াজ পেত, মন্ত্রোচ্চারনের, যজ্ঞের, অট্টহাসির। কিন্ত কেউ কোনোদিন সাহস করেনি বুড়োকে ঘাঁটাবার। কেউ খুব একটা মাথাও ঘামাত না বুড়ো আছে না নেই। একদিন হঠাৎ খুব বাজে গন্ধ বেরোতে লোকে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে বুড়োর লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়, কতদিন আগে মারা গেছেন সে নিয়ে পুলিশের ডাক্তার বলে  দেখে মনে হচ্ছে দু-তিনদিন। অথচ পরে পোস্টমর্টেমে জানা যায় মৃতদেহটি কমপক্ষে তিন সপ্তাহ ওভাবে পড়েছিল। কি উপায়ে মানবশরীরের পচন বিলম্বিত হল, সেটা আজও উদ্ধার করা যায় নি। তারপর বুড়োর ছেলে এসে যাবতীয় আইনি ঝামেলা পেরিয়ে ফ্ল্যাটটার আবার দখল নেয় আর নিজের শালার পরিবারকে ওখানে থাকতে দেয়। কিন্ত দুদিন পর তারাও তালা বন্ধ করে চলে যায়। আগেরবার পুজোর সময় ওখানে ঢাকিদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা এক রাত্তিরের বেশি ওখানে থাকতে পারে নি। 


এতটা শুনেই আমি লাফিয়ে উঠেছি। “তোরা সব জেনেশুনে আমাদের ওখানে শুতে পাঠিয়েছিলি?” দাদা আর বাবলুদা দুজনেই অপ্রস্তুত। আমতা আমতা করে বলল “আমরা ভেবেছিলাম এসব গাঁজাখুরি। আজকালকার দিনে আবার ভুতটুত হয় নাকি!” আমি তো দাদাকে এই মারি তো সেই মারি। “তোদের সন্দেহ তাহলে তোরা ওখানে শুতিস।” যাক গে, সেসব শেষ করে যখন দুচোখের পাতা এক করছি তখন প্রায় ভোর হয় হয়!”


ঘরে সূচ পড়লে শব্দ পাব। সবাই প্রায় তটস্থ। মুখুজ্যেদাই নৈ:শব্দ ভাঙল। “এবার ওঠ সব, চল রান্নার যোগাড়যন্ত্র করা যাক।” সুমনের এতক্ষণে একটু ভয়টা গেছে মনে হল। উঠে বলল, “হ্যাঁ চলো, যত্তসব ভুলভাল গপ্পো। আজ আমি রান্না করব। দোপেঁয়াজা। বৌদি, আমাকে মশলাগুলো বের করে দাওতো”। বলে যেই ও রান্নাঘরে ঢুকেছে, আবার লোডশেডিং! সাথে সাথেই একটা বিচ্ছিরি গলায় হেসে উঠল মঙ্গল। আর রান্নাঘর থেকে “ওরে বাবারে, গেছিরে” বলে দৌড়ে বেরিয়ে এল সুমন।


মুখুজ্যেদার ফ্ল্যাটের হলে তখন হাসির ফোয়ারা।


No comments:

Post a Comment